ভবিস্যতে আমাদের স্মার্ট ফোন কেমন হতে চলেছে
ভবিস্যতে আমাদের স্মার্ট ফোন কেমন হতে চলেছে
আজ থেকে ২০ বছর আগে কি আপনি ভাবতেও পারতেন। যে ওয়াটসঅ্যাপের মতো কোন জিনিস থাকবে আপনার কাছে। যার সাহায্যে কোনও মিডিয়া ফাইল কে আপনি সারা পৃথিবীতে থাকা যে কোনও মানুষের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন। এবং তাদের সাথে চ্যাট করতে পারবেন এবং তাঁরা যেখানেই থাকুক না কেন তাদের কাছে যদি ইন্টারনেট কানেকশন থাকে তবে ১ ক্লিকে আপনি তাদের সাথে ভিডিও কল করতে পারছেন।
শুধু তাই নয়, আজ থেকে 50 বছর আগে গিয়ে যদি কোনও মানুষকে বর্তমানে আমরা যে মোবাইল টেকনোলজিকে ব্যবহার করি, সেই সম্পর্কে বলা হয়। তবে সেই সময়ের মানুষ আমাদের ইডিএড এছাড়া কিছু ভাববে না। কিন্তু বর্তমানে এই সব কিছুই আমাদের চোখের সামনে ধীরে ধীরে সম্ভব হয়েছে। এমনকী প্রতিদিন পৃথিবীতে নতুন নতুন টেকনোলজির আবিষ্কার হচ্ছে। এমনকী আমরা যে ভাবে নিজেদের কে ডেভেলপ করতে পারছি তার থেকেও দ্রুত গতিতে টেকনোলজি ডেভেলপ হয়ে যাচ্ছে। তবে এসব দেখে কি আপনার মনে হয় যে ফোনের টেকনলজি বিকাশ একেবারে তার চরম সীমায় পৌঁছে গেছে।
আমি আপনাদের বলতে পারি যে এটা মোটেই নয়, আপনি কি সত্যি জানতে চান যে আজ থেকে প্রায় 2030 সালের পর স্মার্ট ফোনের টেকনলজি কেমন হবে?
ভবিস্যতে আমাদের স্মার্ট ফোন কেমন হতে চলেছে।
আজকে আমি আপনাদের বলতে চলেছি যে, আজ থেকে 2030 সালের পর আমরা যে স্মার্টফোনগুলি ব্যবহার করবো সেগুলো কেমন হতে পারে?
নম্বর ফাইভ ফ্লেক্সিবেল স্ক্রিন স্মার্টফোন।
আমরা যত দামি ফোন কিংবা যত কম দামি ফোন ব্যবহার করি না কেন ফোনের স্ক্রিন ভেঙে যাওয়ার ভয় আমাদের সবার মধ্যেই থাকে। তবে কী হবে যদি আপনার এই ভয়টাই শেষ হয়ে যায়। আর আপনার ফোনের স্ক্রিন একেবারে স্ট্রেচেবল হয়ে যায়। আর এই ফিচারটা আপনি নিকট ভবিষ্যতে অনেক স্মার্টফোনেই দেখতে পাবেন। বর্তমানে অনেক ফোন আছে যারা এই টেকনোলজিকে ব্যবহার করছে। ভবিষ্যতে স্ক্রিন গুলোকে আপনি কাগজের মতো ফোল্ড করতে পারবেন। এতে ব্যবহার করা হবে ন্যানো মেমব্রেন আর এই ফোনগুলো কে মোর ফোন বলা হয়ে থাকে। সাধারণতএগুলোকে আপনি আপনার হাতের ব্রেসলেটের মতো পরতে পারবেন এবং সোজা করে কথাও বলতে পারবেন।
নাম্বার ফোর হলোগ্রাফিক থ্রিডি মোবাইল ফোন।
আপনি হলিউড মুভিতে হলোগ্রাফিক থ্রি ডিভাইস তো নিশ্চয়ই দেখেছেন। এই টেকনোলজি হলোগ্রাফিক সাহায্যে আমাদের অনুভব করায় যে যার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি সে আমাদের সামনেই আছে। আর বৈজ্ঞানিকরা এরকম ডিভাইসকে বাস্তবে তৈরি করার জন্য বহু বছর থেকে প্রয়াস করে যাচ্ছিল। এতে প্রবলেম হল যে কোনও বড় ডিভাইসের সাহায্যে হলোগ্রামে তৈরি করা যায়। কিন্তু বর্তমানে সুপার স্লিম ফোনের সাহায্যে হলোগ্রামে তৈরি করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু কিছু সময় আগে আরএমআইটি
ইউনিভার্সিটি সুপার স্লিম হলোগ্রাফিক ডিভাইস তৈরি করে। আর এটা হলোগ্রাফিক টেকনোলজির ক্ষেত্রে বড় আবিষ্কার ছিল।
তবে বর্তমানে এর উপরে আরও গভীর অনুসন্ধান হচ্ছে হয়তো নিকট ভবিষ্যতে এটা সাধারণ মানুষের জন্য বাজারে চলেও আসতে পারে। আর এর সাহায্যে আপনি কোন জিনিসে থ্রিডি মডেল আপনার ফোনের সাহায্যে লাইফ প্রজেক্ট করতে পারবেন। এই অনুভূতি সত্যিই আমেজিং হতে চলেছে।
নাম্বার থ্রি স্মার্টফোনে বেস্ট ফ্রেন্ড।
আমরা এটাও দেখছি যেভাবে টেকনোলজি ডেভেলপ হয়ে যাচ্ছে সে ভাবে কিন্তু মানুষও একা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কি হবে যদি এই টেকনোলজি আপনার বন্ধু হয়ে যায় তবে এই ব্যাপারটা আমরা বর্তমানেও দেখতে পাই। বর্তমানে অনেক মানুষ আছে যারা তাদের বেশিরভাগ সময়টা ফোনেই কাটিয়ে দেয়। কিন্তু আমি এখানে ফোনের ওপর ডিপেন্ডেন্ট হওয়ার কথা বলছি না। আমি এমন স্মার্টফোনের কথা বলছি যেটা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকরা এর উপরে কাজ করছে। এবং নিকট ভবিষ্যতে এমন ফোনের আবিষ্কার হতে পারে যেটা এআই দিয়ে চলা রোবোটিক্স হবে। মানে যখনই আপনি এটা কিনে ইউজ করবেন, করার পর প্যাটার্নকে কাজে লাগিয়ে আপনি কী ধরনের মানুষ এবং আপনি কী পছন্দ করেন বা অপছন্দ করেন সেগুলোকে বোঝার চেষ্টা করবে। এমনকি আপনি ইউস করতে করতে ওই ফোনটা এত স্মার্ট হয়ে যেতে পারে যে আপনার কোনো কাজে নির্ণয় নেওয়ার জন্য আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
আপনাকে দুঃখিত দেখে হয়তো ওটা আপনাকে এন্টারটেন ও করতে পারে। মানে এই ফোনটা আপনাকে বন্ধু হিসাবে ফিল করাবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে ব্যবহার করে এই সব কিছু সম্ভব। ফোনেই পার্সোনালাইজ ফিচার এর উপর বৈজ্ঞানিকরা প্রায় এক দশক থেকে কাজ করে চলেছে। এই ফিচার যখন আপনার ফোনে আসা শুরু করবে তখন সেই ফোন আপনাকে আপনার বন্ধু হিসাবে অনুভব করাবে। কিন্তু এটাও আমাদের মনে রাখতে হবে যে টেকনোলজিক্যাল ডিভাইস আপনার সত্যিকারের বন্ধু কিন্তু হতে পারে না। কারণ ওই ডিভাইস টা আপনাকে মেশিনের মতো করে ভাববে সত্যিকারের বন্ধুর মতো আপনার ইমোশনটা সে মানুষের মতো করে ভাববেন না বা বলতে পারেন, ভাবতে পারবে না।
নাম্বার টু ন্যানোটেক ব্যাটারি।
এই টেকনলজি এটা একেবারেই বাস্তব এবং সেটা খুব তাড়াতাড়ি হিট হতে চলেছে। আপনি যে ফোনটা ইউজ করেন সেটাকে চার্জ হতে কত সময় লাগে তো তার আনসার হবে প্রায় প্রায় ১ ঘন্টা। কারণ এই ফোনগুলোতে ১টা ব্যাটারি থাকে না একাধিক ব্যাটারি থাকে যা চার্জার ব্যবহার করে সাইমন টেনিসে একসাথে চার্জ হয়। এজন্য খুব তাড়াতাড়ি ফুল চার্জ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আধ ঘণ্টা থেকে 45 মিনিট সময় তো লেগেই যায়। আর এই চার্জ ফুল করার পর ফোনটা মোটামুটি ১দিন বা ২দিন চলে। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো আগে এ রকম ছিল কি না। আগে যে বেসিক ফোন গুলো ছিলো ওগুলোকে চার্জ হতে মোটামুটি প্রায় তিন ঘণ্টার কাছাকাছি সময় লেগে যেত। এর থেকে তো আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে টেকনোলজি তে আমরা অনেক আগে এগিয়ে এসেছি। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন টেকনোলজি আসতে চলেছে যেটা আপনার ফোনকে প্রায় পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফুল চার্জ করে দিতে পারে।
এবং ব্যাটারিগুলো বর্তমানে ব্যাটের থেকেও আরও বেশিক্ষণ চলবে। আর এই সব কিছুই হতে চলেছে ন্যানো ব্যাটারি টেকনোলজিকে ব্যবহার করে।2015 সালে মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের সম্মেলনে একজন সাইন্টিস্ট কাস্টম স্যামসাং ফোন সবার সামনে দেখায় যে টাতে ব্যাবহার করা হয়েছিল ন্যানো ব্যাটারি। বর্তমানে এই ব্যাটারি টেকনোলজি টাকে অ্যালজাইমারের চিকিৎসার সার জন্য ব্যবহার করা হয়৷ কিন্ত ভবিষ্যতে এই টেকনোলজিকে আমরা আমাদের ফোনেও দেখতে পারি।
নাম্বার ওয়ান দ্য মাইন্ড কন্ট্রোল।
যেহেতু এই প্রজেক্টটা সব থেকে বেশি অ্যাডভান্স তা এটাকে আমি নাম্বার ওয়ান ডে তে রেখেছি। প্রথম দিকের কথা যদি আমরা বলি তবে ফোন কল করতে গেলে ফোনের কাছে যেতে হত। তারপর টেকনোলজি আরও আগে এগোয় এবং কর্টলেস ফোন ব্যবহার করা শুরু হয়। যার সাহায্যে আপনি রিসিভারকে নিয়ে ঘরের যে কোনও জায়গায় গিয়ে কথা বলতে পারতেন। কিন্তু বর্তমানে আপনি আপনার মোবাইল ফোনটাকে নিয়ে সারা পৃথিবীতে যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন। বর্তমানে সিচুয়েশনটা এটা যে আপনার মাইন্ড আপনার হাতকে ব্যবহার করে ফোনকে কন্ট্রোল করে। এমনকী আপনার স্পিচ অর্থাৎ কথা তাঁরাও আপনার ফোনটাকে কন্ট্রোল করা যায়। কিন্তু একবার ভাবুন, যদি আপনাকে কোনও কিছু বলতে বা কোনও কিছু করতে না হয় আপনার ফোনকে কন্ট্রোল করার জন্য কি হবে?
যদি আপনার ফোন আপনার মাইন্ড এর সাহায্যে ডাইরেক্টলি কন্ট্রোল হতে শুরু করে শুনতে নিশ্চয়ই এটা ইম্পপসিবল বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু এই ইম্পপসিবল ব্যাপারটাকে নিয়ে বহু বছর ধরে রিসার্চ চলছে। আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকরা বিভিন্ন প্রজেক্টে এর সাহায্যে সফলতাও পেয়েছেন। বর্তমানে দুর্দান্ত গতিতে এর উপর রিসার্চ চলছে। সেটাকে কন্ট্রোল বাই মাইন্ড না বলে মাইন্ড কন্ট্রোল বলা হচ্ছে। অর্থাৎ আপনার মাইন্ড যেভাবে এই ডিভাইস টাকে কন্ট্রোল করতে পারবে সে ভাবে হয়তো এই ডিভাইসকে কাজে লাগিয়েও আপনার মাইন্ড কন্ট্রোল করা সম্ভব হতে পারে। এই জন্য এই টেকনোলজির ফিচার্স যত বেশি এক্সাইটিং ততটাই বেশি ভয়াবহ কারণ হতে পারে। আমাদের কাছে আলটিমেট মনে হয় এই ডিভাইসটি আবিষ্কার হয়তো আমাদের সব থেকে বড় ধ্বংসের কারণ হতে পারে। আপনার কি মনে হয় অবশ্যই কমেন্ট এ জানাবেন। যদিও তা ভালো লেগে থাকে তবে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে একদম ভুলবেন না।
ধন্যবাদ।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url