বাচ্চা লম্বা হতে করনীয় কি
বাচ্চা লম্বা হতে করনীয় কি?
আপনার সন্তান লম্বা হচ্ছে না কেন? অন্য বাচ্চারা তরতর করে লম্বা হয়ে যাচ্ছে। আপনার বাচ্চা সেই খাঁটো টি হয়ে আছে। তাহলে, ডায়াবিটিস থাইরয়েড হরমোন বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন। তিনি যেটা করবেন সেটা হচ্ছে,আপনার বাচ্চার গ্রোথ চার্ট তৈরি করবেন। এবং তার বৃদ্ধির গতিটা ঠিক আছে,নাকি থেমে গেছে, সেটা দেখবেন।
নানারকম হরমোন সমস্যার কারণে কিন্তু বাচ্চাদের বৃদ্ধির গতি অনেক কমে যায়, এবং বাচ্চা কিন্তু শট হয়ে যেতে পারে। তাই এটা অল্প বয়সে ধরা দরকার। কারণ যখন বাচ্চার বয়স ১৪ বছর হয়ে যাবে, তখন আর চিকিৎসার কোন সুযোগ থাকবে না। সারা বিশ্বে কিন্তু এখন এই খাটো বাচ্চাদের লম্বা করার জন্য যে চিকিৎসা, সেটা কিন্তু এবেলেবল পাওয়া যায়।
বাচ্চা খাটো হওয়ার পিছনে কারণ কি?
প্রথম হচ্ছে যে, বংশগত খাটো। মানে, বাবা মা অনেক খাটো সেক্ষেত্রে বাচ্চা খাটো হবে, এটাইস্বাভাবিক। তো এটারও চিকিৎসা রয়েছে। সেকেন্ড কারণ হচ্ছে,নিউট্রিশনাল। যদিও বাংলাদেশের অর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতির কারণে, এখন যে পুষ্টিহীনতার কারণে বাচ্চারা খাটো হয়ে যাচ্ছে, সে সংখ্যা অনেক কমে গেছে। বেসিক্যালি শহরাঞ্চলে তো সেরকম পুষ্টিহীনতা আমরা দেখি না। কিন্তু আমরা দেখি বাচ্চারা বেশি বেশি খাচ্ছে। বাচ্চারা ফাস্টফুড খাচ্ছে, মোটা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কম খাওয়ার জন্য খাট হচ্ছে সেরকম আজকে আমরা দেখি না। তবে পুষ্টিহীনতার কারণে বাচ্চা খাটো হবে। আরেকটা কারণ হচ্ছে, থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা। থাইরয়েড হরমোন যদি বাচ্চার থেকে কম তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে কিন্তু বাচ্চার বৃদ্ধি কমে যেতে পারে। স্কুলের পারফরম্যান্স কমে যেতে পারে, এবং পাশাপাশি তার লম্বা হওয়া টা কিন্তু কমে যেতে পারে, এবং সে বড় হচ্ছে কিন্তু দেখা যাবে তার হাইট কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণ হচ্ছে না। সময়টা পার হয়ে গেলে আসলে এমন কিছুই করার থাকে না চিকিৎসক এর ৷ ১৪ বছর পরে ডাক্তারের হাতে কোনও চিকিৎসা থাকে না। সে জন্য সময় থাকতে হরমোন বিশেষজ্ঞ, তার সাথে কথা বলুন। তিনি আপনার বাচ্চার হাইট মাপার পাশাপাশি একটা গ্রোথ চার্ট তৈরি করবেন, এবং কিছু হরমোনের পরীক্ষা করবেন যেমন থাইরয়েড হরমোন, গ্রোথ হরমোন, সেই গ্রোথ হরমোন যদি বাচ্চার কম থাকে অথবা গ্রোথ হরমোনের কার্যকারিতা বডিতে কম হয়। সে ক্ষেত্রে কিন্তু বাচ্চা খাটো হতে পারে। তাহলে গ্রোথ হরমোনের চিকিৎসার মাধ্যমে কিন্তু বাচ্চাকে লম্বা করে ফেলা সম্ভব। বাচ্চা লম্বা না হওয়ার পিছনে আরেকটি কারণ হলো, কিছু কিছু শিশু আট নয় বছর পর্যন্ত ঠিকই ছিল। তারপরে মনে হচ্ছে সে অন্য শিশুদের তুলনায় খাটো হয়ে যাচ্ছে। কারণ, দেখা যাচ্ছে তার যৌবনপ্রাপ্তি, সেটা হয়ত বিলম্বিত হচ্ছে। তার জন্য সে হঠাৎ করে অন্যদের তুলনায় খাটো মনে হচ্ছে। আর এর বাইরে আমরা জানি, একটা শিশু যদি স্বল্প ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, জন্মের পর থেকে যদি সে নানাবিধ অসুস্থতায় ভুগতে থাকে, তাহলে কিন্তু তার শারীরিক দুর্বলতার কারণে, আস্তে আস্তে তাকে খাটো করে তুলতে পারে।
বাচ্চা খাটো হলে কি সমস্যা হতে পারে?
বাচ্চার ভবিষ্যৎ সোশ্যাল একটা ইস্যু থাকে যে, বাচ্চা খাটো হলে তাঁর পারফরম্যান্সও কমে যায়, তার কনফিডেন্স কমে যায়, বাচ্চা ডিপ্রেশনে ভোগে এবং অনেক বাচ্চাই দেখা যায় যে তাঁর আলটিমেট গোল যেটা, সেখানে কিন্তু পৌঁছতে পারে না। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে অনেকে জানেন না যে, এরকম ছোট বাচ্চাদের লম্বা করার জন্য চিকিৎসা রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কেউ আর্মিতে যাবে। তো আর্মিতে যাওয়ার সময় তারএকটা নির্দিষ্ট হাইট লাগে, ডিফেন্সে নির্দিষ্ট হাইট লাগে, সেই হাইট কিন্তু অনেক বাচ্চা অ্যাটেন্ড করতে পারে না। ফলে শেষপর্যন্ত তার ভর্তির সময় চলে যায়। এছাড়া এরকম আরো অনেক কারণ আছে। তখন দেখা যায় বাচ্চার ১৪ বছর পার হয়ে গেছে। তখন আর ডাক্তারের হাতে কোনও কিছুই করার থাকে না। প্রতি বছরে যদি কেউ পাঁচ সেন্টিমিটার বেশি লম্বা না হয়, তাহলে কিন্তু অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বাচ্চা লম্বা হওয়ার উপায় কি?
আপনি যদি দেখেন আপনার শিশু জন্মের পর পরই 24 ঘণ্টা বা 48 ঘণ্টার মধ্যে কালো পায়খানা করে নাই এবং শিশুর জন্ডিস হয়েছে, কিন্তু সেটা ভাল হচ্ছে না। দুই সপ্তাহের অধিক সময় থাকে, তাহলে কাল বিলম্ব না করে, আপনি বিশেষ করে, হরমোন চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে আপনার শিশু থাইরয়েড হরমোনের সমস্যায় ভুগছে কিনা সেটা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। থাইরয়েডের হরমোনের সমস্যা হলে শিশু কিন্তু লম্বা হবে না। এর পরে যেটা আমরা জানি সেটা হচ্ছে যে, গ্রোথ হরমোনের সমস্যা। শিশুর বেড়ে ওঠার জন্যে গ্রোথ হরমোন এবং গ্রোথ হরমোনকে আবার কাজ করার জন্য ইনসুলিন লাইক গ্রোথ ফ্যাক্টর একটা হরমোন আছে, যেটা শরীরে কাজ করে। এই হরমোন গুলোর যদি অভাব থাকে শরীরে, তাহলে আপনার শিশু সবদিক থেকেই মনে হবে সুস্থ। শুধু লম্বা হচ্ছে না পরিবারে সবাই লম্বা সে লম্বা হচ্ছে না। সেই স্কুলে যাচ্ছে, লেখাপড়া করছে, চালাক চতুর আছে, কিন্তু সে লম্বা হচ্ছে না। তাহলে আমাদের দেখতে হবে যে আসলে সে পরিবারের তুলনায় কতটুকু খাটো। এবং তাঁর অন্য রোগ ব্যাধি আছে কিনা। সেগুলো নির্মুল করতে হবে। তাঁর শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব আছে কিনা সেটা দেখতে হবে। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। তারপরে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে তার যদি সত্যি সত্যি হরমোনের অভাব হয়, তাহলে তাকে হরমোন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। তাই আগে আপনার সমস্যার মূলে যেতে হবে। যে কথাগুলো আমি বললাম সেগুলো আপনারা অবশ্যই মনে রাখবেন৷ এবং আপনার শিশু যদি ঠিকমতো লম্বা না হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন এবং সময় থাকতে তাকে চিকিৎসা করাবেন। তাহলে অনেকাংশে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url