হাত পা জ্বালা পোড়া কেন হয়? এর কারণ কি
হাত পা জ্বালা পোড়া কেন হয়? এর কারণ কি?
অনেকের হাত পা জ্বালা পোড়া করে, মাথা গরম হয়ে যায়, রাতে অনেকই ঘুমোতে পারেন না এবং খুব কষ্ট হয়। আসলে এটি কেন হয়?এর কারণ কী? এবং এর চিকিৎসা কি? এই ব্যাপারগুলো আমি স্টেপ বাই স্টেপ আপনাদের বলে দেব।
হাত পা জ্বালা পোড়া কেন হয়? এর কারণ কি?
আমাদের মধ্যে অনেকেই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। হাত পায়ে জ্বালাপোড়া করে, হাত পা গরম হয়ে যায় এবং তীব্র ব্যাথা অনুভব হয়।কারও পায়ে হয়, কারও হাতে হয়, কারও মাথা গরম হয়ে যায়। তো হাত পা জ্বালা পোড়ার কারণ কী? যাদের কোন ধরনের নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ আছে, সেগুলোর কারণে নার্ভ ইনবলব হয়ে কিন্তু এটা হতে পারে। কারো কারো নার্ভ ইন্ট্রাবমেন্ট হয়ে যায়, নিউরোপ্যাথি ডেভেলপ করে, এটাকে বলা হয় পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি। সেখান থেকে কিন্তু এটা হতে পারে। জেনেটিক কতগুলো কারণ আছে যেগুলো থেকে নার্ভের রোগ তৈরি হয়। সেখান থেকে হতে পারে। ভিটামিনের অভাবে নিউরোপ্যাথি ডেভেলপ করে, সেটার কারণে এটা হতে পারে। দীর্ঘদিন যদি ডায়াবিটিস থাকে এবং ডায়াবেটিস যদি যথাযথ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয়। ব্লাড সুগার যদি সব সময় বেশি থাকে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকে, তাহলে হাত পায়ের নার্ভ গুলো ড্যামেজ হয়ে যায়। এখান থেকে এই বার্নিং সেনসেশন হয়। হাত পা অবশ হয়ে যায়, হাত পা জ্বালা পোড়া করে। পিন দিয়ে খোঁচালে যে ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়। সেই ধরনের ব্যথা অনুভূত করে এবং দেখা যায় যে, রাতের বেলা ঘুমাতে গেলেই ব্যথা অনেক বেড়ে যায়, হাত পা অনেক গরম হয়ে যায়। এই যে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি এটা যাতে না হয়, সেদিকে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডাইবেটিস ছাড়া আরও কিছু কারণ আছে, যেমন হরমোনের অভাবে, হরমোনের অভাবে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে। যাদের কিডনির সমস্যা আছে, দীর্ঘদিন যাবৎ কিডনি ফেলিওর বা কিডনির কার্যক্ষমতা কমে গিয়েছে,যারা সবসময় ডিপ্রেশনে থাকে। এছাড়া কিছু ওষুধপত্র আছে, সেগুলো দীর্ঘদিন খেলে, এবং ভিটামিন ও মিনারেলস্ এর ঘাটতির কারণে হাত পায়ে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
হাত পা জ্বালা পোড়ার চিকিৎসা।
এ ধরনের হাত পায়ে জ্বালাপোড়া হলে, আমাদের প্রথমেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। আমাদের ডায়াবেটিস হয়ে গেলো কি না বা ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত আছে কিনা,অথবা এই ডায়াবেটিক দীর্ঘদিন থাকার কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি ডেভেলপ করে গেল কি না? আপনার চিকিৎসক এটি বুঝতে পারবে এবং চিকিৎসা সঠিক ভাবে দিতে পারবে।
হাত পা জ্বালা পোড়া প্রতিরোধ করার উপায়।
আপনার যদি ডায়াবেটিস থেকে থাকে তাহলে আপনাকে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যাতে আপনার নার্ভ ইফেক্টেট না হয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ বলতে আমরা বুঝি যে, খালি পেটে সকালে খাবার আগে চার থেকে ছয় এর মধ্যে সুগার রাখতে হবে। খাবার 2 ঘণ্টা পরে ছয় থেকে আট এর মধ্যে সুগার রাখতে হবে। যদি এই মাত্রায় সুগার নিয়ন্ত্রন করতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে আপনার ডায়াবেটিস থেকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি কিন্তু হবে না। এবং হাত পায়ে জ্বালা যন্ত্রণা, অবশ ভাব অথবা ব্যথা। এগুলো থেকে নিজেকে আপনি প্রতিরোধ করতে পারেন। ভিটামিন ডিফিসিএন্সি গুলোর কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হয়। আপনি যদি সকল প্রকার খাবার দাবার ঘুরিয়েফিরিয়ে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখেন, ফল_মূল রাখেন, ভেজিটেবলস রাখেন, হোল গ্রেনস রাখেন, মাছ মাংস এগুলো রাখেন, মোট কথা আপনি যদি একটা ব্যালেন্স ডায়েট মেন্টেন করেন তাহলে কিন্তু এই ধরনের ভিটামিনগুলোর স্বল্পতা কখনও আপনার দেখা দেবে না। এবং সেই ডেফিসিয়েন্সির কারণে আপনার পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হবে না। আর যাদের জেনেটিক কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হয়, এগুলো অবশ্য প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে এই রোগগুলো কিন্তু খুব কম সংখ্যক মানুষের হয়। যেমন ডায়াবেটিস, হরমোন অথবা মহিলাদের ইস্ট্রোজেন লেভেল কমে যাওয়া বা পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং টেনশনের কারণে সবচেয়ে বেশি রোগী হাত পায়ে জ্বালাপোড়া নিয়ে ভুগতে থাকেন। এর কারণ কি সেটা আপনাকে আগে জানতে হবে। এবং আপনার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া যাদের পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি ডেভেলপ করছে, তাদের জন্য তিন চারটি ওষুধ আছে। সেগুলো স্টেপ বাই স্টেপ আপনার চিকিৎসক ঠিক করে দেবেন। সেগুলো খেলে আপনার এই বার্নিং সেনসেশন কমে যাবে। আবার যদি ভিটামিনের কারণে হয় আপনার চিকিৎসক ভিটামিনগুলো ঠিক করে দেবেন। আর যদি আপনার হরমোনের কারণে হরমোনের ওষুধ পত্র দিয়ে কিন্তু এটি ঠিক রাখা যাবে এবং আপনাকে হয়তো চিকিৎসক কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বলে দেবেন, যেমন নিয়মিত ব্যায়াম করা অথবা টেনশন ফ্রি থাকার জন্য রিল্যাক্সেশন টেকনিক প্র্যাকটিস করা। আসলে এখানে আমার পক্ষে সবগুলো বলে দেওয়া এই কারণেই সম্ভব নয়। কারণ হলো আপনার বার্নিং যে হচ্ছে, হাত পায়ে জ্বালাপোড়া হচ্ছে, এটির কারণ যেহেতু অনেকগুলো সুতরাং চিকিৎসাও নির্ভর করবে কারণ এর উপর। আপনার যে কারণে এটি হচ্ছে সেই কারণটিকে মাথায় রেখে আপনার সমাধানগুলো দেওয়া হবে।
আপনার যদি এই ধরনের রোগে সাফার করেন। যে আপনার হাত পায়ে জ্বালাপোড়া হচ্ছে তাহলে আপনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। আপনার চিকিৎসক এর কারণ বের করে আপনাকে ওষুধপত্র ঠিক করে দেবেন। সাথে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বা লাইফস্টাইলে কিছু নিয়ম কানুন দেবেন এবং তার মাধ্যমে আপনি এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে পুরোপুরি চিকিৎসা করে ভাল করে ফেলা সম্ভব হবে এবং আপনি আবার সুস্থ হয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url