শীতে ত্বকের যত্ন কীভাবে নিবেন
শীতে ত্বকের যত্ন কীভাবে নিবেন
শীতের শুষ্ক আবহাওয়া আমাদের ত্বককে শুষ্ক করে তুলে। এসময় আমাদের ত্বকের পানিশূন্যতা দেখা দেয়। শীতের শুষ্কতায় ত্বক রুক্ষ হয়ে চুলকানী হয়। এমনকি চুলকানোর কারণে ত্বক খাসখসে হয়, এবং সেখান থেকে সংক্রমণও হতে পারে। বয়স্কদের শুষ্ক ত্বকের ঝুঁকি বেশী থাকে। কারণ বয়স্কদের ত্বকে, প্রাকৃতিক ত্বকের তেল ও লুব্রিকেন্টের পরিমাণ কম থাকে। এই শুষ্ক আবহাওয়ায় আবার অনেকের ত্বকে লালচে ভাব, ফোসকা বা ফুসকুড়ি, একজিমা দেখা দেয়। শীতকালে পানি কম পান করার কারণে ও ঘন ঘন সাবান ব্যবহারে ত্বক শুষ্ক হয়। সাবানের মধ্যে ইমালসিফায়ার উপাদান থাকে, যা আমাদের ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দূর করে দেয়। বিভিন্ন ময়েশ্চারাইজার যা আমাদের ত্বকের জন্য উপযোগী নয়, সেগুলো ব্যবহারে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। শীতের পোশাকে থাকা বিভিন্ন উপাদান যা আমাদের ত্বকের শুষ্কতায় ভূমিকা রাখে।
শীতে ত্বকের যত্ন কীভাবে নিবেন
(১) ত্বকে ময়েশ্চারাইজ ব্যবহার। শীতে ত্বকের শুস্কতার জন্য ভালো একটা ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। বাদাম তেল বা এভাকাডো সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। যা আপনার ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। যখনই ত্বক শুষ্ক মনে হবে, তখনই ব্যবহার করুন।
(২) সানস্ক্রিন ব্যবহার। আমরা অনেকেই গ্রীষ্মের প্রখর রোদে সানস্ক্রিন ব্যবহার করে থাকি। তাই বলে শীত আসার করনে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার প্রয়োজনীতা কমে গেছে, তা কিন্তু নয়। শীতকালেও আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি বাহিরে বের হওয়ার ৩০ মিনিট আগে, এস পি এফ ১৫ - ৩০ সম্পন্ন, সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।
(৩) শীতে আর্দ্রতা বজায় রাখা। শীতে আপনার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে মাঝে মধ্যে মুখে পানির ঝাপটা দিতে পারেন। তাহলে সহজে আপনার ত্বক শুষ্ক হবে না।
(৪) অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। গোসলের সময় আরাম অনুভব হলেও অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকবেন। এতে আমাদের ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে পরে। তাই আমাদের উচিৎ কুসুম গরম পানি দিয়ে স্বল্প সময়ে গোসল শেষ করা। গোসলে অতিরিক্ত গরম পানি আপনার ত্বকের ফলিকল গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে। আর এই ফলিকলগুলো আমাদের ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। গোসলের সময় পানিতে কয়েক ফোঁটা জোজোবা বা বাদাম তেল দিয়ে নিবেন, যা আপনার ত্বককে আদ্রতা এবং মসৃণ করতে সহায়তা করবে, এবং গোসলের সময় অপেক্ষাকৃত কম ক্ষারীয় সাবান ব্যাবহার করুন, ও অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী সাবান নির্বাচনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
(৫) ভেজা ত্বকের পরিচর্যা। গোসলের পর এবং প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
(৬) ঠোঁটের পরিচর্যা, শীতের শুস্কতা আমাদের ঠোঁটের আদ্রতা নষ্ট করে ফেলে, এবং রুক্ষতা দেখা দেয়। আর এই রুক্ষতার কারণে আমরা অনেকেই জিব দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর চেস্টা করি, আসলে এটা করা উচিত নয়। এতে করে ঠোঁটের আদ্রতা নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য আমাদের করনীয় হলো, কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাবেন, এতে আপনার ঠোঁট কখনোই ফাটবে না।
(৭) মেকআপ, শীতকালে মেকআপ করার সময় আমরা অনেকেই লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে থাকি, আসলে এটা ঠিক না। তাই লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করে, শীতকালে ক্রিম ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন।
(৮) চুলের যত্ন, শীতকালে কখনোই ভেজা চুলে বাহিরে বের হবেন না। ভেজা চুল আমাদের চুলের আর্দ্রতা নষ্ট করে দেয় এবং চুল ভেঙে যায়।
(৯) হ্যাট পরা, মাথার তালু এবং চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে হ্যাট পরুন। তবে হ্যাট টি যাতে বেশি টাইট না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখবেন।
(১০) খাবারে সচেতন হোন। জলীয় উপাদান সমৃদ্ধ খাবার, যেমন শাকসবজি, স্যুপ, কমলা, আপেল, তরমুজ, শসা, টমেটো, গাজর এগুলো বেশি করে খান। নিশ্চিত করুন আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ও জিংক গ্রহণ করছেন। যাতে শরীরে কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপন্ন হয়। এছাড়া ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার ও ফ্যাটযুক্ত মাছ গ্রহণ করুন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।
comment url