ডায়াবেটিস রোগীরা রুটি খাবেন নাকি ভাত খাবেন

ডায়াবেটিস রোগীরা রুটি খাবেন নাকি ভাত খাবেন,ডায়াবেটিস হলে করনীয় কী ?ডায়াবেটিস রোগিদের খাবার,ডায়াবেটিস রোগিদের ঘুম এবং খাবারের নিয়ম।

 ডায়াবেটিস রোগীরা রুটি খাবেন নাকি ভাত খাবেন। 

ডায়াবেটিস রোগীরা রুটি খাবেন নাকি ভাত খাবেন এটা নিয়ে অনেকেই  একটা দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগে। এবং ম্যাক্সিমাম ডায়াবেটিস রোগীরা একটু কনফিউশনে থাকেন যে আমার কি রুটি খাওয়া উচিৎ রাতের বেলায়। আমি রুটি খাব নাকি ভাত খাব।


ডায়াবেটিস রোগিদের খাবার

 চলুন তাহলে আজকে আমরা এই বিষয়টা জেনে নেওয়া যাক টাইপিস্ট রোগীরা রুটি খাবেন নাকি ভাত খাবেন আপনাদের সঙ্গে রয়েছি আমি পুষ্টিবিদ তামান্না। ডায়াবেটিস হল সাধারণত দেখা যায় একটা মেটাবলিক ডিসঅর্ডার।


ডায়াবেটিস হলে করনীয় কী ? 


 ডায়াবেটিস হলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে দেখা যায় যে ইনসুলিনের মাত্রা কমে যায়। এবং  আপনি যেটাই খাবেন সেই খাবারটা আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং এক্ষেত্রে দেখা যায় এই ডায়াবেটিস থেকে অন্য আরও বিভিন্ন ধরনের কমপ্লিকেশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 এবং আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই  ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে রাখতে হবে। আপনার ওজনটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।


ডায়াবেটিস রোগিদের খাবার


ডায়াবেটিস রোগিদের ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন যে, আমি যদি ভাত না খেয়ে রুটি খাই কিংবা যদি বলেন রুটি  আমার ভাল লাগছে না আমি ভাত খাব। সে ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা খুবেই কনফিউজড থাকে। তখন কিন্তু দেখা যায় যে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগার  মাঝখান থেকে তাঁদের অতিরিক্ত ক্যালোরি নেওয়া হয়ে যায়। 

যেটাই সে খায়  না কেন সে যদি রুটি না খেয়ে ভাত খায় স্বাভাবিকভাবে ক্যালোরিটা ব্যাল্যান্স করতে পারে না, যার কারণে তাঁর ওজনটা বেড়ে যায় এবং ব্লাড সুগার টা বেড়ে যায়। আবার ভাত যারা খেতে অভ্যস্ত তারা যদি হঠাৎ  করে রুটি খায় তখন দেখা যায় তারা বেশি পরিমাণে রুটি খেয়ে ফেলে। যার কারণে ব্লাড সুগার টা বেড়ে যায়।


ডায়াবেটিস রোগিদের ভাল খাবার রুটি নাকি ভাত


আপনাদেরকে আগে জানতে হবে ডায়াবেটিস রোগিরা রুটি খাবে না ভাত কোনটা আপনাদের জন্য বেটার সেক্ষেত্রে কথা বলতে গেলে আগে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সম্পর্কে জানতে হবে। স্বাভাবিকভাবে দেখা যায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স টা হল আপনি যেই খাবারটি খাবেন না কেন সেই খাবারটা কত দ্রুত আপনার রক্তে ব্লাড সুগার বাড়বে বা কমাবে। 


ডায়বেটিস রোগীদের রুটি খাবার নিয়ম


আপনারা যেটা করেন যে সাদা আটার রুটি খেতে বেশি পছন্দ করেন তখন স্বাভাবিকভাবেই দেখা যায় যে ছোটবেলা থেকেই আমরা সাদা আটা খেয়ে অভ্যস্ত। সবাই হঠাৎ করে ডায়াবিটিস ধরা পড়লে তখন আগের অভ্যাসটা চেঞ্জ করতে চায় না। এক্ষেত্রে আপনাদের জানিয়ে রাখি যে সাদা আটার চেয়ে লাল আটা বেশি কার্যকর।


যেমনঃ  লাল আটা বা গম এর আটার রুটি বা ভুট্টার আটার রুটি সেটা কিন্তু আপনার ব্লাড সুগার টা খুবই ভালো কন্ট্রোলে রাখতে পারবেন।


ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রুটি তৈরি 


ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লড সুগার কন্ট্রোলে রাখতে গেলে আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে রুটি তৈরি  আপনি কীভাবে করবেন। এখন আপনি যদি  স্বাভাবিকভাবে একটু পানি সিদ্ধ মানেপানি ফুটিয়ে তার মধ্যে আটা সিদ্ধ করে তারপর রুটি তৈরি৷ করেন৷ এটা করতে গেলে  আপনার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স টা বেড়ে যাবে। তখন দেখা যাবে যে আপনার রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স পাওয়ার কারণে লাল আটা দিয়ে বা গমের আটা দিয়ে যদি আপনি রুটি সিদ্ধ করে তৈরি সেটাও কিন্তু আপনার দেখা যাবে যে খুব ভালো একটা ব্লাড সুগার কনট্রোল করতে পারবেন না। 


আমরা যেটা করতে পারি যে কুসুম গরম পানি বা ঠাণ্ডা পানি যেটাই হোক সেটা দিয়ে যদি লাল আটা গমের আটা ভুট্টা যেটাই হোক সেটা যদি একটু খাই করে রুটি বানাই তাহলে কিন্তু আপনার ব্লাড সুগারখুবই ভাল কন্ট্রোলে থাকবে। 


ডায়াবেটিস রোগিদের কোন চালের ভাত প্রয়োজন


আবার ভাতের ব্যাপারে এবার একটু বলি। আপনার স্বাভাবিক ভাবেই দেখা যায় যে সাদা চালের ভাত সেটাতে কিন্তু আপনার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স 72 আবার লাল চাল বা ব্রাউন চাল যেটা আছে এটা কিন্তু আপনার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র 68 তো বুঝতেই পারছেন যে আপনার জন্য কোনটা বেটার কারণ সাদা চাল টা খুব ভাল করে পালিশ করা থাকে যেটা দেখা যায় আপনি খাওয়ার সাথে সাথে দ্রুত হজম হয়ে যায় হজম হয়ে আপনার রক্তে ব্লাড সুগার টা বাড়িয়ে দিচ্ছে কিন্তু ভাতই যদি আপনি লাল চালের খান। সে ক্ষেত্রে আপনার ব্লাড সুগার টা খুব ধীরে ধীরে বাড়াচ্ছে। কারণ সেটাতে দেখা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন মিনারেলস এবং ফাইবার থাকে। যেটা খুব আস্তে আস্তে হজম হয় এবং খুব আস্তে আস্তে আপনার ব্লাড সুগার টা বাড়াবে। 


রুটির ব্যাপারটাও সেই তো ভাত এবং রুটি খাওয়া নিয়ে কনফিউসড হওয়ার কিছু নেই। আপনি যদি রাতে ভাত খেয়ে অভ্যস্ত থাকেন। অবশ্যই আপনি ভাত খেতে পারবেন রাতে সেটা হতে হবে আপনাকে ব্রাউন রাইসের এবং সবচেয়ে ভালো হয় যদি পরিমাণমতো আপনি ঘুমান। 


ডায়াবেটিস রোগিদের ঘুম এবং খাবারের নিয়ম।


 ঘুমানোর দুই থেকে 3 ঘণ্টা আগে ভাত খেয়ে নিবেন এবং পরিমাণটা ঠিক থাকতে হবে। যেমন আপনার যদি এক প্লেট বা দেড় প্লেট বা দুই প্লেট পরিমাণ ভাত নির্ধারণ করা থাকে, আপনি কতটুকু পরিমাণ খেয়ে নিলে  আপনার ব্লাড সুগার বাড়ার সম্ভাবনা থাকছে না। এবং ভাত যদি আপনার কম মনে হয় সেই জায়গায় আপনি সবজি বা স্যালাদ নিয়ে আসতে পারেন বেশি পরিমানে। তখন কিন্তু দেখা যাবে খিদে লাগার প্রবণতাও আপনার থাকবে না।


 আর রুটির যে ব্যাপারটা হল যারা  ভাত খেয়ে অভ্যস্ত তাকে যদি ২ টা রুটি দেওয়া হয় সে কিন্তু সেটা খেতে পারবে না। আর কিছু সময় দেখা যাবে 4/5 টা রুটি খেয়ে ফেলছে তখন খিদেটা একটু কম মনে হবে। এবং সে ক্ষেত্রে কী হবে আপনি রুটি লাল আটার খান অথবা গমের খান  আপনার জন্য যতটুকু ক্যালরি নির্ধারণ করা আছে তার চেয়ে বেশি খান তখন ওই গ্লাইসেমিক লোড বেড়ে যাবে। কিন্তু আপনার ব্লাড সুগার ও বেড়ে যাবে।  এক্ষেত্রে আপনাকে আগে বুঝতে হবে যে রুটি  আপনার জন্য যতটুকু রুটি দেওয়া আছে টিক ততটুকু রুটি আপনি খেয়ে আপনার জন্য হবে কিনা বা আপনি কতটুকু রুটি খেয়ে স্যাটিসফাইড হবেন কি না বা আপনার খিদেটা মিটবে কিনা। 

আর যদি আপনার মনে হয় যে আমি রুটিটা খেয়ে আমার ভাল লাগছে না আরও বেশি খিদে লাগছে তখন সেক্ষেত্রে অবশ্যই ভাত খেতে পারবেন। সেটা হতে হবে ব্রাউন রাইসে এবং সেটা যেন আপনার ঘুমানো দুই থেকে 3 ঘণ্টা আগে খেয়ে নিতে হবে।


  তো আপনারা বুঝতেই পারছেন যে ভাত বা রুটি খাওয়ার উপরে আপনার ডায়াবেটিস ব্লাড সুগার বাড়বে কি না সেটা  নির্ধারণ করছে। আপনি কতটুকু পরিমাণে খাচ্ছেন ব্রাউন ব্রেড খাচ্ছেন নাকি হোয়াইট রাইস খাচ্ছেন তার উপরে ডিপেন্ড করে এবং রুটির ব্যাপারটাও সেই লাল আটার রুটি গমের আটার রুটি নাকি সাদা আটার রুটি সেটার ওপরই নির্ভর করে আপনার ব্লাড সুগার বাড়বে কিনা। ধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে।


পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url