গর্ভবতী মায়ের সঠিক খাবার

গর্ভবতী মায়ের সঠিক খাবার /ভিটামিন সি কেন প্রয়োজন / গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার/ আরও জানতে আমাদেরপেইজ সূচিপত্রে দেখে নিন

গর্ভবতী মায়ের সঠিক খাবার

গর্ভবতী মায়ের জন্য সটিক খাবার। এবং তার মধ্যে  ভীষণ উপকারী হলো গর্ভবতী মায়ের ৬টি খাবার। এ নিয়ে আজকের আলোচনা।  এই ৬টি খাবার কেন খাবেন? এই ৬টি খাবারে কি কি গুন এবং এই খাবার গুলো প্রয়োজনীয়তা কী ? সে বিষয় গুলো নিয়ে আজকের আলোচনা। এবং আমাদের পেইজ সুচিপত্রে দেখে নেওয়া যাক। 

গর্ভবতী মায়ের ৬টি খাবার

আসসালামু আলাইকুম আমি ডা. তাসনিম জারা। আজকে আলোচনা করবো গর্ভকালীন মায়ের সঠিক খাবার নিয়ে।

গর্ভবতী সময়ে সটিক খাবার মা ও শিশুকে অনেকগুলো রোগ ব্যাধি আর সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারে। 

যেমনঃ 

১. শিশুর জন্মগত ত্রুটি হওয়া।

২. ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হওয়া,

৩. প্রিম্যাচুর বাচ্চা হয়। অর্থাৎ সময়ের আগেই প্রসব হয়ে যাওয়া। 

এই সব সমস্যার সম্ভাবনা কমায় সঠিক খাবার 

প্রথমে খুব সহজ একটা খাবার দিয়ে শুরু করি যেমনঃ-১. ডিম

ডিমের উপকারীতা 

গর্ভের শিশুর ব্রেন বা মস্তিষ্ক যখন তৈরি হচ্ছে তখন এই ব্রেন যাতে ভালোভাবে তৈরি হয়। সেজন্য কলিন নামে একটা পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন।

আর কলিন আমাদেরকে খাবার থেকেই নিতে হয় কারণ মাল্টি ভিটামিন ট্যাবলেট গুলোতে সাধারনত কোলিন থাকে না। আর ডিম হল কলিনের খুব ভালো একটা উৎস। কলিন ছাড়াও ডিমে বিভিন্ন  ধরনের পুষ্টি উপাদান আছে।

ডিমে এত ধরনের ভিটামিন মিনারেল পাওয়া যায় যে গবেষকেরা এটাকে অনেক সময় বলে নেচারস মাল্টিভিটামিন অর্থাৎ প্রকৃতির দেওয়া মাল্টিভিটামিন।

ডিম খাওয়ার নিয়ম।

ডিম খাওয়ার সময় একটা  জিনিস খুব ভাল করে খেয়াল রাখবেন সেটা হল গর্ভকালীন সময়ে কাঁচা ডিম আছে এমন কোনও খাবার খাবেন না। যেমন অনেকেই কাঁচা ডিম খেয়ে থাকেন বা হালকা সিদ্ধ এই খাবারগুলো এখন সম্পূর্ণ ভাবে এড়িয়ে চলবেন। আর ডিম খাওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন যাতে ডিমটা ভাল ভাবে রান্না হয়, না হলে সেখান থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া শরীরে ঢুকতে পারে।

ডিমের কুসুম এবং সাদা অংশ দুইটাই  যাতে ভালোভাবে সিদ্ধ হয় এটা খেয়াল রাখবেন। কুসুম যাতে নরম না থাকে  আর ঐ যে কলিন এর কথা বললাম কলিন ডিম ছাড়া অন্যান্য কিছু খাবারে আছে। 

যেমন মুরগির মাংস, গরুর মাংস, দুধ এসবের পাওয়া যায় এই খাবারগুলো পরিমাণমতো আপনার খাবার তালিকায় রাখবেন। 

২. দুই নম্বরে বলব এমন কিছু খাবারের কথা যে সব থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। 

গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।

গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম দুইটা কারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম কারণটা হল গর্ভের শিশুর শরীরে হাড়গুলি মজবুত করার জন্য দাঁত শক্ত করার জন্য ক্যালসিয়াম দরকার।

আর দ্বিতীয় কারণটা হল, মায়ের ব্লাড প্রেশার স্বাভাবিক রাখার জন্য যাদের আগে কখনোই ব্লাড প্রেশার বা রক্তচাপ নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। প্রেগন্যান্সিতে দেখা যায় এমন অনেকের ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্লাড প্রেশার বেড়ে গিয়ে কিছু জটিল রোগও দেখা দেয়।

যেমন : Eclampsia. তার পর Pre - Eclampsia নামের রোগ। এই সব রোগের সম্ভবনা কমাতে সাহায্য করে ক্যালসিয়াম তাহলে মা শিশু দুজনের সুস্থতার জন্য ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। 

আর খাবারের মধ্যে ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে ভাল উৎস হল দুধ। এখন  তাহলে কতটুকু দুধ খাবেন। অনেকগুলো গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন তিন কাপ পরিমাণ দুধ খাওয়া প্রয়োজন। 

দুধ দিয়ে তৈরি খাবার।

যেমনঃ টক দইও খেতে পারেন, মিষ্টি দই এর চেয়ে টক দই বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই দই খেলে টক দই খাওয়ার চেষ্টা করবেন। আমাদের মধ্যে কারো কারো দেখা যায় যে দুধ বা টক দই খেলে একটু হজমে সমস্যা হয়। এমনটা হলে অন্যান্য সব খাবার থেকে ক্যালসিয়াম নিতে হবে, যেমন শাক ব্রকোলি, কাঠবাদাম এসব থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। কিন্তু আপনার যদি মনে হয় যে আপনি খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম নিতে পারছেন না। তাহলে অবশ্যই আপনার ডাক্তারকে জানাবেন। তিনি দেখতে পারবেন যে আলাদা করে আপনার ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট লাগবে কি না। 

আর গর্ভকালীন সময়সীমা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস শেষ হওয়ার পর চতুর্থ মাস থেকে আমরা সবাইকে আলাদা করে এমনিতেই ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে বলি। 

৩. গর্ভবতী মায়ের জন্য শাক 

গর্ভবতী মায়ের জন্য শাকের উপকারীতা

তার পরে হলো শাক গর্ভাবস্থায় শাকের পরামর্শ দিই। অনেকগুলো কারণের মধ্যে আমি এখানে একটি কারণ বলি শাক এ ভালো পরিমাণে ফোলেট ও আইরন থাকে। মায়ের গর্ভে যে শিশুর মাথার খুলি তৈরি হচ্ছে ব্রেন তৈরি হচ্ছে মেরুদণ্ড বা শিরদাঁড়াটা তৈরি হচ্ছে। এগুলো ভালোভাবে তৈরি হওয়ার জন্য ফোলেট দরকার হয়। ফোলেটের যদি অভাব হয় তাহলে শিশু নানান ধরনের জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে মাথার খুলি টা পুরোপুরি তৈরি না হয়ে শিশু জন্মাতে পারে। তখন কয়েক ঘন্টার বেশি সাধারণত শিশু বাঁচতে পারে না। 

বাবা,মায়েদের  জন্য এটা খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। কিন্তু এখন এমন হওয়া অনেক কমে গেছে। কারণ গর্ভাবস্থায় ফলেটের উপরে অনেক জোর দেওয়া হয়। পাশাপাশি আমরা গর্ভবতী মায়েদেরকে  আলাদা করে ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খেতে বলি। আর শাক থেকে এ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। 

৪. গর্ভবতী মায়ের জন্য আইরন

গর্ভবতী মায়ের জন্য আইরনের প্রয়োজনীয়তা

গর্ভবতী মায়ের শরীরে নতুন রক্ত তৈরি করতে আইরন দরকার হয়। আর আইরন এর অভাব যে সমস্যা গুলো হয় যেমনঃ-

১. মায়ের শরীরে রক্ত স্বল্পতা হতে পারে।

২. শিশুর ওজন কম হতে পারে

৩. সময়ের আগেই প্রসব হয়ে যেতে পারে। 

আর সময়ের আগে প্রসব হওয়া মানে যে, কিছুদিনের জন্য অসুবিধা সেটা না। বড় হওয়ার পরেও এটা সন্তানকে নানানভাবে ভোগাতে পারে। লাখ লাখ মানুষের উপর অনেক বছর ধরে গবেষণা করে দেখা গেছে, যারা সময়ের আগে জন্মেছে তাদের আগে আগেই বিভিন্ন ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বেশি থাকে। 

যেমনঃ 

১. হার্টের রোগ,

২. ডায়বেটিস,

৩. হাই ব্লাড প্রেশার,

৪. কিডনি রোগ,

 এই রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বেশি থাকে, যাঁদের সময়ের আগেই জন্ম হয়। তাহলে এই দুইটি পুষ্টি উপাদানের কথা বললাম ফোলেট এবং আইরন এই দুই টাই গর্ভাবস্থায় এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা খাবারের পাশাপাশি এগুলো আলাদা ভাবে ট্যাবলেট হিসেবে খেতে বলি। আর খাবারের মধ্যে এই দুই পুষ্টি উপাদানের খুব ভালো একটি উৎস হল শাক। আর এগুলোর পাশাপাশি  আরও অনেক ধরনের ভিটামিন মিনারেল আছে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত শাক খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

প্রতিদিনই কোন না কোন ধরনের শাক খাবেন৷ পালং শাক, পুঁই শাক, ডাটা শাক, পাট, শাক লাউ শাক, কলমি শাক, কচু, শাক, হেলেঞ্চা শাক যখন আপনি যেটা হাতের কাছে পান তবে অবশ্যই রান্নার আগে ভাল করে হাত ধুয়ে নেবেন। না হলে সেখান থেকে শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু ঢুকতে পারে।

৫. গর্ভবতী মায়ের জন্য ভিটামিন সি 

গর্ভবতী মায়ের জন্য ভিটামিন সি কেন প্রয়োজন?

সেটা আগে একটু বলি। আপনারা জানেন যে আমাদের শরীর কিছুটা ভিটামিন জমিয়ে রাখতে পারেন। যেমন ভিটামিন ডি জমিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু আমাদের শরীর ভিটামিন সি জমিয়ে রাখতে পারে না। আবার ভিটামিন সি তৈরি করতে পারে না। তাই প্রতিদিন আমাদেরকে খাবার থেকে ভিটামিন সি টা নিতে হয়।

প্রেগন্যান্সিতে শরীরে অন্য সময় এর থেকে বেশি ভিটামিন সি প্রয়োজন হয়। 

ভিটামিন সি কেন প্রয়োজন? 

ভিটামিন সি শিশুর দাঁত, দাঁতের মাড়ি এসব তৈরিতে সাহায্য করে ভিটামিন সি মজবুত হাড় গঠন করতে ভিটামিন সি প্রয়োজন হয়। আর শরীর যেহেতু ভিটামিন সি জমিয়ে রাখতে পারে না, সেই জন্য গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ভিটামিন সি আছে এমন খাবার খাওয়া প্রয়োজন। 

আমরা সাধারণত চিন্তা করি যে শুধুমাত্র টক জাতীয় ফল থেকেই বুঝি ভিটামিন সি পাওয়া যায়। টক জাতীয় ফল ছাড়াও আরও অন্যান্য অনেক ধরনের খাবার থেকেও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। আমি এখানে কয়েক ধরনের খাবার কথা বলে দিচ্ছি, যেখান থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এগুলো জানা থাকলে আপনার যখন যেটা সুবিধা সেগুলো খাবার তালিকায় রাখতে পারবেন। 

যেমনঃ -

টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, ব্রকোলি, করলা, কাঁকরোল। তারপর একটু আগে শাকের কথা বললাম, সাত থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায় আর ফলের মধ্যে আমরা জাম্বুরা বরই কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি, কিউই ফল এগুলো থেকে ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। 

আর সবজি রান্নার সময় একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন অনেক তাপে বা অনেকক্ষণ ধরে সবজি রান্না করলে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সবজি অল্প সময় তাপ দিয়ে রান্না করার চেষ্টা করবেন যাতে ভিটামিন সি নষ্ট না হয়ে যায়। 

আর ফল তো কাঁচাই খাওয়া হয় সেখানে রান্না নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হবে না টমেটোও কিন্তু কাঁচা খাওয়া যায় সুন্দর করে কেটে আলাদা করে খেয়ে ফেলতে পারেন। সেখান থেকে আপনি ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি পাবেন। 

৬. ডাল

গর্ভবতী মায়ের জন্য ডাল এবং ডালের উপকারীতা কী? ফ্রেগনেন্সিতে কেন ডাল খাওয়া প্রয়োজন?  

ডাল কীভাবে রান্না করে খাবেন। ফ্রেগনেন্সি অবস্তায় ৩ টা কারণে ডাল খেতে হবে।  

প্রথম কারণ।

 আমাদের শরীরে যে পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষের দরকার হয় আমরা অনেকেই প্রতিদিন খাই না। কারণ আমাদের খাবারের মধ্যে ভাত  অনেক বেশি খাওয়ার অভ্যাস। কিন্তু প্রেগন্যান্সির সময়ে শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটানো আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রোটিন গর্ভের শিশুর মাংসপেশি তৈরিতে সাহায্য করে। তো এখন প্রোটিন কোথা থেকে পাওয়া যাবে?

 বিশেষ করে মাছ মাংস ডিমে প্রোটিন বেশি থাকে। কিন্তু প্রেগন্যান্সির সময় দেখা যায় যে কেউ মাছ বা মাংস খেতে পারছেন না। কারণ এ সবের গন্ধ লাগে বমি বমি ভাব হয়। আর তখন দেখা যায় প্রোটিন খাওয়া আরও কমে যায়। তো মাছ মাংস ছাড়াও ডাল হচ্ছে প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস। তাই প্রেগনেন্সির সময় আপনি নিয়মিত ডাল খেতে পারেন। এতে করে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সহজ হবে৷

 দুই নাম্বার কারণ হলো। 

অনেকে দেখা যায় সারা জীবনে কোনওদিন কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। কিন্তু প্রেগন্যান্সির সময় খুব প্রকট কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। এমনকী গর্ভধারণের সময় অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাইলস বা অর্শরোগ দেখায় যে প্রেগন্যান্সি পরে অনেকে ভোগাতে থাকে। তাই প্রেগন্যান্সির সময়টাতে কোষ্ঠকাঠিন্যের ব্যাপারে সচেতন থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এখানেই আসছে ডালের উপকারিতা ডালে ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে এই ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করতে সাহায্য করে। 

গর্ভাবস্থায় ডাল খাওয়ার তিন নম্বর কারণ। 

অনেক নারীর ক্ষেত্রে গর্ভকালীন সময়ে প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস দেখা যায়। এই ডায়াবেটিস মা ও গর্ভের শিশু দুজনেরই নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলে। তাই গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন। আর ডাল এ ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। ডালে থাকা ফাইবার রক্তে সুগারের পরিমাণ টা স্টেবল রাখতে সাহায্য করে। স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে এবং ডায়াবিটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। 

ডাল খাওয়ার তিনটা কারণ বুঝিয়ে বললাম৷ আশা করি আপনারা ডালের উপকারিতা বুঝতে পেরেছেন। 

ডালে যে সব উপকারিতা আছে 

যেমনঃ এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফোলিক ইত্যাদি পুষ্টি উপাদানও আছে। এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন যে কোন ডাল খাবেন মুসুর ডাল মুগ ডাল, মাসকলাই ডাল, ছোলার ডাল, মটর ডাল যেটা আপনার ভালো লাগে সেটাই খেতে পারেন। আর রান্নার ক্ষেত্রে একটাই পরামর্শ দেব। সেটা হচ্ছে পাতলা ডাল এর পরিবর্তে ঘন ডাল খাবেন। 

শেষ কথা

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় গর্ভাবস্থায় বাসা থেকে বের হলে রাস্তার ভাজাপোড়া খেতে ইচ্ছে করে এই সব  অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। এটা প্রেগন্যান্সির সময়ে চলা খুবেই ক্ষতিকর। 

তাহলে রাস্তায় কী খাবেন?

বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও বীজ খেতে পারেন। এগুলো হচ্ছে পুষ্টির একটা মিনি প্যাকেট। গবেষকেরা বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর ১০০ খাবারের তালিকা করেছে। সেই তালিকায় সবার উপরে এক নম্বর পুষ্টিকর খাবার হচ্ছে কাঠবাদাম তার পরে আছে  মিষ্টি কুমড়ার বীজ তো শুধু কাঠ বাদাম মিষ্টি কুমড়ার বীজ শুদু নয়, প্রায় সবধরনের বাদাম ও বীজ এ অনেক পুষ্টি গুণাগুণ আছে, যেমন চিনাবাদাম থেকে ফলিক অ্যাসিড আর কলিন পাওয়া যায়, যেটা শিশুর ব্রেন গঠনে সাহায্য করে। 

ওয়ালনাট বা আখরোট এতে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাট। এটাও শিশুর ব্রেন গঠনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবার সূর্যমুখী বীজের ভালো পরিমাণে ভিটামিন বি সিক্স আছে। যেটা নতুন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। তাই নাস্তায় আপনি ১০/১৫ টা বাদামখেতে পারেন। পরিমাণটা একটু খেয়াল রাখবেন অল্প করে খাবেন৷ কারণ বাদাম আর ভিজে অল্পতেই অনেক ক্যালোরি থাকে। বেশি খেলে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার একট সম্ভাবনা থাকে। গর্ভবতী মায়ের যে সব খাবার নিয়ে আলোচনা করলাম এগুলো আপনার খাবার তালিকায় রাখার চেষ্টা করবেন। এছাড়া অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার গুলো আছে সেগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন আর খুব ভালো করে খেয়াল রাখবেন যাতে গর্ভাবস্থায় ওজন অতিরিক্ত বেড়ে না যায়। 

আপনার ও আপনার গর্ভের শিশুর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা থাকল।

Google News

পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
এই পোস্ট সম্পর্কে আপনার মন্তব্য জানান

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন - অন্যথায় আপনার মন্তব্য গ্রহণ করা হবে না।

comment url